ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে রেজাউল করিম সরদার নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে খুলনার তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানোর পর উল্টো হয়রানিমূলক মামলা এবং পুরাতন মামলায় গ্রেফতার করে দীর্ঘ দিন কারাবন্দি করে রাখা হয়।
জামিনে মুক্তি পেয়ে ওই তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী। আদালত মামলাটি পুনরায় দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। এখন মামলা তুলে নিতে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ। শনিবার দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে খুলনার চুকনগর বাজারের ব্যবসায়ী রেজাউল করিম সরদার এ অভিযোগ করেন।
অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা হচ্ছেন, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ত ম রোকনুজ্জামান, কয়রা থানার এসআই প্রকাশ চন্দ্র সরকার ও ডুমুরিয়া থানার এসআই লিটন মল্লিক। এর মধ্যে রোকনুজ্জামানকে জেলা পুলিশের কন্ট্রোল রুমে বদলি করা হয়েছে।
নির্যাতনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ব্যবসায়ী রেজাউল করিম সরদার বলেন, ২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল তাকে ডিবির ওসি ত ম রোকনুজ্জামান ফোর্স নিয়ে নগদ ৪১ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোনসহ ধরে নিয়ে যান। এর পর রূপসা থানার তালপুর পুলিশ ফাঁড়িতে তিন দিন আটকে রেখে বেদম মারধর করা হয়।
রেজাউল করিমের স্ত্রী রুমা খাতুন বলেন, ওসি আমার মোবাইলে ফোন দিয়ে ৪ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। না দিলে আমার স্বামীকে ক্রসফায়ারে দেওয়ার হুমকি দেন। তখন নগদ ১৪ হাজার টাকা নিয়ে ওই ফাঁড়িতে ছুটে যাই। কিন্তু ৪ লাখ টাকা না দিলে তাকে আরও মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এ টাকা জোগাড় করতে না পারায় আমার স্বামীকে কয়রা থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং ডাকাতি মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেফতার দেখিয়ে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়।
ওই ব্যবসায়ীকে নির্যাতন ও ক্রসফায়ার থেকে রক্ষা করতে তিনজনকে ৩ লাখ ১৬ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে, যার অডিও এবং ভিডিও রেকর্ডিং আমাদের কাছে রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে কথোপকথনের রেকর্ড শোনানো হয়।
অভিযোগের ব্যাপারে পুলিশ পরিদর্শক ত ম রোকনুজ্জামান সমকালকে বলেন, রেজাউল করিম সরদার একটি ডাকাতি মামলার আসামি। সুন্দরবনের বিভিন্ন ডাকাত কয়রা থানায় আটকের পর তার নাম বলেছে। এ জন্য তাকে অন্যান্য মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছিল। চাঁদার দাবিতে আটক বা নির্যাতনের অভিযোগ সত্য নয়। দুদকের তদন্তেও বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে।